লোহাগড়া (নড়াইল) প্রতিনিধি
নড়াইলের লোহাগড়া মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের চাকরিচ্যুত প্রধানশিক্ষক আব্দুর রহিম খানের বিরুদ্ধে দুই লাখ টাকার চাঁদাবাজির মামলা করেছেন ইউএনও মো. আবু রিয়াদ।
বুধবার (৩ ডিসেম্বর) রাতে তিনি বাদি হয়ে আব্দুর রহিম খানসহ আরও অজ্ঞাত ৩/৪ জনকে আসামি করে লোহাগড়া থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলা নং-৬,/৩.১২.২৫।
এরআগে সকালে ইউএনও’র নির্দেশে পুলিশ চাকরিচ্যুত প্রধানশিক্ষক রহিম খানকে (৫০) তার বাড়ি থেকে আটক করে। এরপর ইউএনও’র কার্যালয়ে এনে বিভিন্ন মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানশিক্ষক, সুধীজন ও গণমাধ্যমকর্মীদের উপস্থিতিতে সৃষ্ট ঘটনায় ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় তাকে। শেষে অভিযুক্ত আব্দুর রহিম খানকে লোহাগড়া থানায় সোপর্দ ও মামলা দায়ের করেন ইউএনও।
আব্দুর রহিম খান মল্লিকপুর ইউনিয়নের আতোষপাড়া গ্রামের মঞ্জেল খানের ছেলে। ২০২৪ সালের শুরুর দিকে লোহাগড়া মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের নানা অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে তিনি চাকরিচ্যুত হন।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, পহেলা ডিসেম্বর ইউএনও আবু রিয়াদ অফিসশেষে ডাকবাংলোয় যাওয়ার পথে রহিম খানসহ ৩-৪ জন তার গাড়ি থামিয়ে ‘প্রভাবশালী ব্যক্তি’ পরিচয়ে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে ভয়ভীতি প্রদর্শন করেন। চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে কথা-কাটাকাটি এবং একপর্যায়ে লোকজন এগিয়ে এলে আসামিরা হুমকি-ধামকি দিয়ে এলাকা ত্যাগ করেন।
এজাহারে বলা হয়েছে, রহিম খান ইউএনও’র ব্যবহৃত মোবাইলফোনে বিভিন্ন সময়ে টাকা চেয়েছেন। তিনি তাকে ‘সাড়ে হারামজাদা’ নামে অশ্লীল ও কুরুচিপূর্ণ কবিতা পাঠিয়েছেন এবং তা বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ করায় ইউএনও’র সম্মানহানি হয়েছে।
ইউএনও অফিসের কর্মচারী মানত হোসেন ও শরিফুল ইসলামকে মামলার সাক্ষি করা হয়।
লোহাগড়া থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) অজিত কুমার রায় জানান, আসামি আব্দুর রহিম খানকে বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) দুপুরে আদালতের মাধ্যমে জেল-হাজতে পাঠানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, উপজেলা নির্বাহী অফিসার হিসেবে মো. আবু রিয়াদ গত বছরের ২৪ ডিসেম্বর লোহাগড়ায় যোগদান করেন। সম্প্রতি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে তাকে বাগেরহাট জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে পদায়ন করে বদলি করা হয়েছে বলে একটি সূত্র জানিয়েছে।