যশোর, বাংলাদেশ || বৃহস্পতিবার, ৪ ডিসেম্বর ২০২৫
Subornovumi Subornovumi Subornovumi Subornovumi Subornovumi Subornovumi
Ad for sale 870 x 80 Position (1)
Position (1)
Ad for sale 870 x 100 Position (1)
Position (1)

পরীক্ষার্থীদের জিম্মি করে আন্দোলন! তীব্র ক্ষোভ

স্টাফ রিপোর্টার

, যশোর

প্রকাশ : সোমবার, ১ ডিসেম্বর,২০২৫, ০৮:০৮ পিএম
আপডেট : মঙ্গলবার, ২ ডিসেম্বর,২০২৫, ১২:৫১ এ এম
পরীক্ষার্থীদের জিম্মি করে আন্দোলন! তীব্র ক্ষোভ

যশোরে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে চলছে বার্ষিক পরীক্ষা। আর দশম শ্রেণিতে চলছে নির্বাচনি পরীক্ষা। এরমধ্যে সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা চার দফা দাবিতে কর্মবিরতি পালন করছেন।

৩০ নভেম্বর এক নোটিসের মাধ্যমে এ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। বাংলাদেশ সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির ব্যানারে এ কর্মসূচি ডাকে।

দেশের অধিকাংশ সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়ে রোববার (৩০ নভেম্বর) তাদের নিজস্ব যোগাযোগ মাধ্যম, নোটিস বোর্ড ও টেক্সটের মাধ্যমে ‘অনিবার্য কারণবশত ১.১২.২০২৫ তারিখের পরীক্ষা স্থগিত করা হলো’ বলে জানিয়েছে।

এরমধ্যে যশোর জিলা স্কুল কোনোরকম নোটিস না দিয়েই পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে বলে অভিভাবক ও পরীক্ষার্থীরা জানিয়েছেন।

যশোর জিলা স্কুলের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী সুমন বলেছে, ‘পহেলা ডিসেম্বর তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিষয়ে পরীক্ষা দিতে এসে শুনছি, পরীক্ষা হবে না। আগে কোনো প্রকার নোটিস দেওয়া হয়নি। সোমবার যাদের পরীক্ষা ছিল, তারা শীতের সকালে এসেছিল। এরপর শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের ভোগান্তির মধ্যে পড়তে হয়।’

পরীক্ষার সময় শিক্ষার্থীদের জিম্মি করে শিক্ষকদের আন্দোলনে যাওয়া মোটেও উচিত হচ্ছে না জানিয়ে সুমন আরো জানায়, শিক্ষকদের কোনো দাবি দাওয়া থাকলে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা যেত, আন্দোলনেও যেতে পারেন। কিন্তু পরীক্ষার সময় এ আন্দোলন মোটেও যুক্তিসঙ্গত নয়। শিক্ষার্থীদের জিম্মি করে কোনো আন্দোলন হতে পারে না।’

অভিভাবক ফাতেমা খাতুন জানান, তার ছেলে সপ্তম শ্রেণিতে পড়ে। খুব সকালে ঘুম থেকে উঠিয়ে খাওয়া-দাওয়া সেরে পরীক্ষার এনেছিলেন। এসে শোনেন, পরীক্ষা হবে না।’

একইভাবে অনেক অভিভাবক সংশ্লিষ্ট স্কুলের প্রধানশিক্ষকসহ অন্য শিক্ষকদের ভর্ৎসনা করে জানান, দাবি আদায়ের জন্য শিক্ষার্থীদের জিম্মি করা উচিৎ হয়নি। বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নোটিস ঠিকমতো দিলেও যশোর জিলা স্কুলে কেন নোটিস দেওয়া হয়নি- তা নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেন অভিভাবকরা।

যশোর জিলা স্কুলের এক শিক্ষক জানিয়েছেন, সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির ব্যানারে এ কর্মবিরতি চলছে। শিক্ষার্থীদের জিম্মি করে এ কর্মবিরতি যাওয়া মোটেও যুক্তিসঙ্গত না। কিন্তু শিক্ষকদেরও উপায় নেই।

ক্ষুব্ধ অভিভাবক নাজমা বেগম বলেন, ‘এভাবে পরীক্ষা বন্ধ হয়ে গেলে ছেলেমেয়েরা তাদের মনোবল এবং লেখাপড়ায় আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে। ছাত্র-ছাত্রীকে জিম্মি করে শিক্ষকরা তাদের দাবি আদায়ের আন্দোলন করবেন, বিষয়টি খুবই দুঃখজনক।’

পরীক্ষার সময় শিক্ষকদের চার দফা আন্দোলনের নামে কর্মবিরতির বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও চলছে নানা সমালোচনার ঝড়।

পরীক্ষার সময় কর্মবিরতির ব্যাপারে যশোর জিলা স্কুলের সহকারি প্রধানশিক্ষক জামাল উদ্দীন বলেন, ‘শিক্ষকরা দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছেন। কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। এই মুহূর্তে কর্মবিরতি ছাড়া কোনো উপায় নেই।’ পরীক্ষা স্থগিতের নোটিস দেওয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।

যশোর জিলা স্কুলের সভাপতি, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আশেক হাসান বলেন, ‘সরকারের সিদ্ধান্ত পরীক্ষা নিতে হবে। যশোরের ১১ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে সাত স্কুলে পরীক্ষা হয়েছে। চারটি স্কুলে পরীক্ষা নেওয়া হয়নি। বিষয়টি মন্ত্রণালয় জানে। তারাই সিদ্ধান্ত নেবে।’

মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) ১১ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। প্রাথমিক বিদ্যালয়েও যথারীতি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

প্রসঙ্গত, শিক্ষকদের চার দফা দাবির মধ্যে রয়েছে, সহকারী শিক্ষক পদকে বিসিএস (সাধারণ শিক্ষা) ক্যাডারভুক্ত করে ‘মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের’ গেজেট প্রকাশ, বিদ্যালয় ও পরিদর্শন শাখায় কর্মরত শিক্ষকদের বিভিন্ন শূন্য পদে নিয়োগ, পদোন্নতি ও পদায়ন দ্রুত কার্যকর, সুপ্রিম কোর্টের রায়ের আলোকে বকেয়া টাইমস্কেল ও সিলেকশন গ্রেডের মঞ্জুরি আদেশ এবং ২০১৫ সালের আগের মতো সহকারী শিক্ষকদের দুই থেকে তিনটি ইনক্রিমেন্টসহ অগ্রিম বর্ধিত বেতন-সুবিধা বহাল করে গেজেট প্রকাশ।

ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

Ad for sale 270 x 200 Position (2)
Position (2)