কেশবপুর (যশোর) সংবাদদাতা
জেলা পরিষদ এবং ওয়াকফ জমি দখল করে সেখানে নতুন করে ১২টি দোকান বরাদ্দ দেওয়া ভবনের কাজ বন্ধ করে দিলেন কেশবপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. শরীফ নেওয়াজ।
বুধবার (৩ ডিসেম্বর বেলা ১২টার দিকে তিনি কেশবপুর পৌর শহরের ৭ নম্বর ওয়ার্ড মধ্যকুল টার্মিনাল এলাকায় অভিযান চালিয়ে সরকারি জমিতে অবৈধভাবে ঘরনির্মাণের কাজ বন্ধ করে দেন।
কেশবপুর এসিল্যান্ড অফিসের পেশকার হাদিউজ্জামান বলেন, ‘পৌর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আব্দুস সালাম খান জেলা পরিষদের জায়গা এবং ওয়াকফ-এর জমি জবরদখল করে সেখানে ১২টি পাকা দোকানঘর নির্মাণ করে বরাদ্দ দিচ্ছেন। ইতোমধ্যে ৬টি দোকানঘর ৩ লাখ টাকা করে অগ্রিম নিয়ে ভাড়া দেওয়া হয়েছে। পরবর্তীতে ওইসব দোকানের উত্তরপাশে একইভাবে জায়গা দখল করে আরও ৬টি দোকান (মোটর গ্যারেজ) নির্মাণের কাজ করছেন। এই ৬টি দোকান ভাড়া দিতে তিনি আরও ১৮ লাখ টাকা অগ্রিম নিয়েছেন বলে জানা যায়।’
এছাড়া, আব্দুস সালাম ও তার ভাই আসলাম খান ৮-৯ বছর পূর্বে টার্মিনালের সামনে ওয়াকফ্-এর জমি দখল করে সেখানে ২০টি দোকান নির্মাণ করে ভাড়া দেন। এসব দোকান থেকে প্রতিমাসে তারা ৬০-৭০ হাজার টাকা ভাড়া আদায় করে পকেটস্থ করছেন।
সড়কের পাশে জেলা পরিষদের প্রায় ৩০ শতক জমি ওই পরিবারটি দখল করে সেখানে দোকান নির্মাণ করে ভাড়া এবং ৭ শতক জমি বিক্রয় করে দিয়েছেন। এছাড়া মধ্যকুল খানপাড়া জামে মসজিদের নামে ওয়াকফ এস্টেটের প্রায় ১০ বিঘা জমি প্রায় ৪০ বছর ধরে দখলে রেখে ভোগ করছেন।
সূত্র জানায়, ওয়াকফ- জমি দেখভালের দায়িত্ব যশোর জেলা প্রশাসকের। তিনি এই এস্টেটের সভাপতি এবং ওই কমিটির সদস্য উপজেলা নির্বাহী অফিসার। কিন্তু জেলা প্রশাসক এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয় থেকে এসব মূল্যবান সম্পত্তি ঠিকমত দেখভাল না করায় তা দিনদিন সেই সম্পদ বেদখল হয়ে যাচ্ছে।
মধ্যকুল খানপাড়া জামে মসজিদের মুসল্লিরা মসজিদের ওয়াকফ্-এর জমি উদ্ধার করে ওই সম্পত্তি সরকারি হেফাজতে নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে সালাম খান বলেন, ‘খানপাড়া জামে মসজিদের নামে আমার পূর্বপুরুষরা জমিদান করে গেছেন। তাই ওই সম্পত্তি দেখভালের দায়িত্ব আমাদেরই। এছাড়া ওয়াকফ এস্টেটের সভাপতি জেলা প্রশাসক এবং কমিটির সদস্য উপজেলা নির্বাহী অফিসার হলেও সম্পত্তি দেখভালসহ এখান থেকে আয়ের সব অর্থ আমাদের পরিবারেরই।’
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. শরীফ নেওয়াজ বলেন, ‘জেলা পরিষদ ও ওয়াকফ এস্টেটের বহু সম্পত্তি সালাম খান ও আসলাম খান দখলে রেখে সেখানে দোকানঘর বরাদ্দ দিয়ে আসছেন। বুধবার নতুন করে নির্মাণাধীন ৬টি দোকানঘর নির্মাণের কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের পরবর্তী নির্দেশক্রমে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’