লোহাগড়া (নড়াইল) প্রতিনিধি
লোহাগড়া উপজেলার কামঠানা গ্রামে একটি ‘মিথ্যা মামলা’ দায়েরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে ক্ষোভে ফুঁসে উঠেছে সাধারণ মানুষজন।
তাদের অভিযোগ, পাশের মোচড়া এলাকার জলিল শেখের ছেলে বহু মামলার আসামি নয়ন শেখ নিজের অপকর্ম ঢাকতে এহেন কর্মকাণ্ড করেছে। সঠিক তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত ঘটনা উদঘাটন করে ন্যায় বিচারের দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগী পরিবারসহ গ্রামবাসী।
বুধবার (৩ ডিসেম্বর) বিকেলে সরেজমিনে কামঠানা গ্রামের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষজনের সাথে কথা বলে এমনটাই জানা গেছে।
খোঁজ খবর নিয়ে জানা যায়, সম্প্রতি লোহাগড়া পৌরশহরের মোচড়া এলাকার জলিল শেখের ছেলে চিহ্নিত মাদক কারবারি নয়ন শেখ তার আপন ভাগ্নে আব্দুল্লাহ শেখের স্ত্রীকে অনৈতিক প্রস্তাব দেয়। এ ঘটনায় আব্দুল্লাহ ক্ষুব্ধ হয়ে নয়ন শেখকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করেন।
এই ঘটনা ধামাচাপা দিতে নয়ন তার ভাগ্নের নাম বাদ দিয়ে পাশের কামঠানা গ্রামের হাফিজার মুন্সির ছেলে আশিকুর রহমান সানজার (৩৫) ও শরিফুল মুন্সি (৪০), রবিউল মুন্সির ছেলে সাজিদ মুন্সি (২১), মোচড়া গ্রামের বাগু শেখের ছেলে জামাল শেখ (৫০) ও নড়াইল সদর উপজেলার বাঁশগ্রামের গফফার মাহামুদের ছেলে শিবলী নোমান মাহামুদকে (৪০) আসামি করে নড়াইলের আমলি আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা নম্বর ২৬৭/২৫। পরবর্তীতে আদালতের নির্দেশে লোহাগড়া থানা পুলিশ পহেলা ডিসেম্বর মামলাটি নথিভুক্ত করে।
মামলা দায়েরের পর লোহাগড়া থানার এসআই ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ইমরান আহমেদ অভিযান চালিয়ে লোহাগড়া বাজার থেকে রবিউল ইসলামের ছেলে আশিকুর রহমান সানজারকে (৩৫) গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠান।
সবচেয়ে অবাক করার বিষয় হচ্ছে, এ মামলার সাক্ষি মোচড়া গ্রামের হিরু শেখের ছেলে আল আমিন শেখ (৩১)। তিনি নয়নের ওপর হামলার ঘটনা সম্পর্কে কিছুই জানেন না-বলে গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে অভিযোগ করেন।
মামলার আসামি সাজিদের বাবা কামঠানা গ্রামের ব্যবসায়ী রবিউল ইসলাম বলেন, 'শুধুমাত্র নিরাপত্তার অভাবে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে লোহাগড়া শহরের পোদ্দারপাড়ায় বসবাস করছি। মাস দশেক আগে মোচড়া গ্রামের বহু অপকর্মের হোতা নয়ন ও তার চাচাতো ভাই শাওন পরস্পর যোগসাজসে বাজার থেকে বাড়ি ফেরার পথে স্কুলের পাশে আমাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে দুই লাখ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় আমি লোহাগড়া থানায় চারজনকে আসামি করে মামলা করি। মামলা নম্বর- ০৮/১২.০২.২০২৫। মামলার পর নয়ন নিজের অপকর্ম ঢাকতে আমার ছেলে ও ভাইকে আসামি করে লোহাগড়া থানায় অপর একটি মামলা দায়ের করে। এই মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলার প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং তদন্ত করে ঘটনার সাথে জড়িতদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।’
এসব বিষয়ে লোহাগড়া ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য রতন শেখ বলেন, ‘ঘটনাটি ঘটেছে মোচড়া গ্রামে। অথচ, আসামি করা হয়েছে আমার গ্রামের নিরীহ চারজনের নামে। এই ঘটনার প্রতিবাদ ও তদন্ত করে প্রকৃত অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’
লোহাগড়া থানার ইন্সপেক্টর তদন্ত অজিত কুমার রায় আশ্বস্ত করে বলেন, ‘মামলার ঘটনা তদন্ত করে প্রকৃত দোষীদের অভিযুক্ত করে পুলিশ আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করবে